আমার ডোডো
রিমা রায়চৌধুরী
সেদিন ছিল বিশ্বকর্মা পূজো। চারদিকে পুজোর আয়োজন চলছিল। সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে আমার কোলে আমার দ্বিতীয় সন্তান ডোডো এলো। সেকি আনন্দের দিন। সবাই নার্সিংহোমে ভিড় করেছে , ডোডোকে দেখার জন্যে। ডোডোর দিদি বোনকে পেয়ে আপ্লুত। আস্তে আস্তে ডোডো বড়ো হচ্ছে, একদিন আমার মা বললেন ডোডো মনে হচ্ছে কানে শুনতে পায় না। ডোডোর বাবা সেই কথা কিছুতেই বিশ্বাস করতে চাইছিলেন না। আমি ডাক্তারের কাছে গিয়ে জানতে পারলাম ডোডো সত্যি কানে শুনতে পাই না। সেদিন আমার মাথার উপর আকাশ ভেঙে পড়ল। তারপর শুরু হলো আমার যুদ্ধ। চারদিকে ঘোরাঘুরি , আজ এখানে কাল ওখানে , জীবনে নেমে এলো সীমাহীন নীরবতা। এই নীরবতাকে জয় করল অণ্বেষা নামে পিতা মাতাদের সংগঠন। এই অণ্বেষা আমায় কি দিয়েছে সেটা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। এই অণ্বেষা আমায় সাহস জুগিয়েছে। একটা কথা না বলে পারছিনা অণ্বেষা আমাকেও চলার পথ দেখিয়েছে। আমি অণ্বেষার সহযোগিতায় ডোডো কে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পেরেছি।
আরেকটা বিশেষ কথা, ডোডোর কানে শোনার অসুবিধার পাশাপাশি আচরণগত কিছু সমস্যাও আছে সেটা স্নিগ্ধাদিই আমাকে বলেন। সেটার ব্যবস্থাও অণ্বেষায় হচ্ছে। এছাড়া প্রয়োজনে অন্যান্য জায়গাতেও আমি ডোডোকে নিয়ে যাই। অণ্বেষায় এসে আমরা যেভাবে নিজেদের ভাবের আদান প্রদান করতে পারি, সেটা আমরা বোধ হয় অন্য কোথাও করতে পারি না। স্নিগ্ধাদি, সোমাদি সুস্মিতা, পূবালী ও অন্যান্য সকলের সহযোগিতা ও উপদেশ অনুসারে ডোডো কে নিয়ে একটা জায়গায় পৌঁছতে পারবো। অণ্বেষায় ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাস ও স্পিচ থেরাপি , গ্রূমিং ক্লাস, কাউন্সেলিং ইত্যাদি কর্মসূচীর দ্বারা অণ্বেষা প্রতিবন্ধকতাযুক্ত শিশুদের সফলভাবে বড় করে তুলছে। অণ্বেষা আমার মতো মায়েদের পথ প্রদর্শক এবং সাহসের সাথে এগিয়ে চলার পরিচালক। আমি গর্বিত যে আমি এই অণ্বেষার সাথে যুক্ত।
তথ্য সূত্র: স্যুভেনির, অন্বেষণ ২০১৫
তথ্য সূত্র: স্যুভেনির, অন্বেষণ ২০১৫