Tuesday, September 13, 2016

Anwesha: "An Interaction on Hearing Impairment with Associated Disorders"



"An Interaction on Hearing Impairment with Associated Disorders"
  organised by          
Anwesha Kolkata & Deaf Blind Resource Centre, SVH

On 10th September, Saturday, 2016 Anwesha Kolkata and SVH held an interactive session for the parents of children with hearing impairment. Dr. Ruma Chatterjee, an eminent resource person & Project Director, Society for Visually Handicapped (SVH) Deaf Blind Resource Centre, Kolkata delivered speech on “Hearing Impairment with Associated Disorders”.
More than 25 parents participated in the awareness programme. Dr. Chatterjee lucidly spoke about the deaf blindness issue, early identification, intervention as well as remedial procedures to deal the problems confidently for children of all ages. Ms. Annapurna Maruvada, a special educator and mother of a visually challenged girl assisted Dr. Chatterjee during the programme.
Dr Chatterjee and Ms. Maruvada made the participants understand the different types of vision problems by making them wear different spectacles for different types of vision loss. During the discussions, she emphasised the need for regular eye checkups particularly for those who may have a family history such as Glaucoma. The participants received the SVH’s Bi-Lingual (English Bengali) Manual on Deaf-Blind disability which will serve as a guideline for each one of them to dispel the misconception about the deaf blindness issue. The manual contains various information like the meaning of the disability, current issues of deaf blind child, persons and organizations working for cause, important facts & findings, causes & effects of the nerve related disorders, symptoms of the problem, possible ways to tackle the issue, efforts for mainstreaming/inclusion and many more.
Many unanswered questions of the parents were met and the patience and ability to meet their queries during the short time period by the resource person was really praiseworthy. The programme was good and we have got the spontaneous feedback for the audience. Anwesha team presented a small memento to her as a token of respect.    
Last but not the least, one of her advices for the parents which are still lingered in our mind was that we need to be aware, stay optimistic and fight endlessly until and unless our child is properly mainstreamed into the society despite the disability related issues.  





















































Wednesday, September 7, 2016

The Effectiveness in Name by Mr. Debashish Roy

নামের সার্থকতা 


দেবাশীষ রায় 

"অণ্বেষা" নামের মধ্যে এক জাদু লুকিয়ে আছে।  যতই দেখছি আর যতই শুনছি , মনে হচ্ছে যেন অনেক কিছু এখনও অজানা রয়ে গেল।  ভোরের আলো  যেমন রাতের অন্ধকারের গ্লানি ভুলিয়ে দিয়ে নতুন করে উদ্ভাসিত আলোকে মনের প্রফুল্লতা আনে , অণ্বেষার অন্বেষণ ঠিক তেমনই নতুন করে বাঁচার পথ দেখায়।

চার পাঁচ জন মা পরস্পরের হাত ধরে তাদের বধির শিশুদের নিয়ে ছয় বছর আগে শুরু করেছিলেন যে যাত্রা, সে যাত্রায় ছিল অনেক ক্লান্তি আর হতাশা আর ছিল প্রশ্ন চিহ্ন, পারবো তো? আজ সেই যাত্রার ছয়  বছর পূর্ণ হল। আজ তারা দেখতে পেয়েছে আলোর দিশা।  তাদের সাথে পঁয়ত্রিশ জন সমব্যাথী পরিবারও সমান ভাবে এগিয়ে চলেছে  তাদের বধির শিশুদের নিয়ে। তারাও আজ জানতে পেরেছে তাদের শিশুরাও পারবে অন্য পাঁচটা  শিশুর মতো সমান ভাবে এগিয়ে যেতে। 

যে শিশু বধিরতা নিয়ে জন্মায় বা জন্মের ঠিক পরে অসুস্থতার কারণে স্বাভাবিক নিয়মে কথা বলতে পারে না, কেবল আকার, ইঙ্গিত বা ইশারার দ্বারা পরস্পরের ভাব বিনিময় করে। কিন্তু আমাদের অনেকের কাছেই হয়তো এটা অজানা যে, শিশু অবস্থা থেকে বিশেষতঃ এক থেকে দুই বছর বয়সের মধ্যেই বা তারও  আগে যদি শ্রবণ সহায়ক যন্ত্র ব্যবহার করে কথা শেখানোর কাজ শুরু করানো যায় তাহলে নিশ্চয়ই সেই শিশু আমার আপনার মতো স্বাভাবিক ভাবেই কথা বলবে।  যদিও এই সাধারণ সত্য কথা বলা যত সহজ বাস্তবায়িত করা ততই কঠিন। আর তার জন্য চাই কঠোর প্রচেষ্টা  আর মনোবল। অণ্বেষার যাত্রা শুরু এখন থেকেই।

অণ্বেষা হল একটি পরিবার, যে পরিবারের প্রতিটি শিশুই বধির অর্থাৎ শুনতে পায়  না বা শুনলেও খুব কম শোনে। এই বধিরতাযুক্ত শিশুদের কথা শেখানো থেকে শুরু করে তাদের পড়াশুনো এমনকি মানসিক বিকাশের জন্য যে বিশেষ প্রশিক্ষণের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে অণ্বেষা সেই রাস্তা দেখায়।  সেই চলার পথে অনেক বাধা। অণ্বেষা সেই পথ কে এত সহজ ভাবে নিয়ে যেতে সাহায্য করে যে মনেই হয় না, সেই পথ এতো দুরূহ।  শিশুদের বাবা ও মায়েরা পরস্পরের সুবিধা অসুবিধাগুলো আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ খুঁজে পায়। সমাজের বধিরতাযুক্ত শিশুদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রয়াস উত্তরোত্তর বৃদ্বি পাবে আর উজ্জ্বল হয়ে উঠবে অণ্বেষার নাম। 

সূত্র: অন্বেষণ ২০১১ বার্ষিক জন সচেতনা প্রোগ্র্যাম স্যুভেনির থেকে সগৃহীত       

Ei To Jibon by Ms. Simanti Roy

এই তো জীবন

সীমন্তি রায়

এই আধুনিক যুগের নারীও কিন্তু জীবনের সার্থকতা খুঁজে পাই সন্তানের "মা" ডাক শোনার মধ্যেই। আমার জীবনেও তার কোন ব্যতিক্রম ঘটে নি। "১০ ই অক্টোবর ২০০৬' আমাদের সন্তান সৌত্রিক ভূমিষ্ট হয়েছিল। আমরা মা বাবা হলাম। শুরু হলো রঙিন স্বপ্নের জাল বোনার পালা। অনেক আশা, আকাঙ্খার সঙ্গে সঙ্গে অনেক আশঙ্কা আর অনেক প্রশ্নও উঁকি ঝুঁকি মারছিলো মনের মধ্যে - বাবু কি দেখতে পায় ? বাবু কি শুনতে পায় ? বাবু কি হাঁটতে পারবে? সর্বোপরি মা বলে ডাকবে তো? উত্তর পেতে অপেক্ষা করতে হলো।  দেখলাম নিয়মমতো বাবু বসতে শিখলো। দাঁড়াতেও শিখলো, হাঁটতেও পারল। কিন্তু শুনতে বোধ হয় পেল না। আপন মনে খেলা করত, সাড়া দিত না। জোরে ডাকলে মাঝে মাঝে তাকাত। ভাবতাম মন দিয়ে খেলা করছে তাই বোধ হয় সব সময় সাড়া দেয় না। ভাবিনি বাবু শুনতে পায় না। তবে সন্দেহটা ছিলই। বাবুর বাবাও লক্ষ্য করেছে। খুব গা করেনি। আমার মতো সেও ভাবতে পারতো না এও কি হয়? আসলে আমাদের ভাবনার জগতে বধিরতা নিয়ে কোনো ধারণা বা জানা বোঝার জায়গা ছিল না।

জগদ্ধাত্রী পূজার দিন আমাদের বাড়ির সামনে প্রচন্ড জোরে মাইক্রোফোন বাজছে, ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা নাচা-নাচি করছে, কিন্তু বাবু কেবল প্রতিমা দেখছে। শব্দের অনুরণন কি ওর মধ্যে হয় না? প্রশ্ন ও সন্দেহ দুটোই দৃঢ় হলো। বাবুর তখন দু বছর চার মাস বয়স। গৃহ চিকিৎসক বধিরতা নির্ণায়ক পরীক্ষা করাতে বললেন। প্রাথমিক ভাবে খারাপ লাগায়  কলকাতায় একজন প্রখ্যাত চাইল্ড স্পেশালিস্ট এর কাছে গেলাম, তিনি BERA করাতে বললেন। পরীক্ষা হলো, রিপোর্ট এলো Profound Hearing Loss in Both Ears- আমার স্বপ্নের মণিময়  প্রাসাদ তাসের ঘরের মতন ভেঙে পড়ল। চারপাশের অন্ধকার, কিছুই দেখতে পাচ্ছি না।  চোখের জল কোনো বাধাই সেদিন মানে নি. কারোর সান্ত্বনাই সেদিন যথেষ্ট হয় নি।  আচমকাই মনে হয়েছিল জীবনটা ব্যর্থ, স্বপ্ন পূরণের বুঝি কোনো বাস্তবটাই নেই. বাবুর বাবা কিংকর্ত্যববিমূঢ়। ডাক্তার বাবু বললেন ওকে শ্রবণ সহায়ক যন্ত্র দিতে হবে। শুরু হলো সংগ্রামের এক নতুন অধ্যায়।সেই সংগ্রামের সাথী ছিলেন আমার দুই পরিবার। তারা তাদের সাধ্যমতো আমাকে সহায়তা ও নির্ভরতা দিয়েছেন। আমার মনোবল বেড়েছে।  আমার মধ্যে ধীরে ধীরে একটা লড়াই করার ক্ষমতা এসেছে। জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা এসেছে।

একটা কথা না বললেই নয়। আমরা একই দিনে কলকাতার দুজন প্রখ্যাত E.N.T স্পেশালিস্টের পরামর্শ নিয়েছিলাম, যদি অন্য কোনো পথ থাকে। আসলে, " বৃথা আশা মরিতে মরিতেও মরে না।" একজন মানুষের কথা না বললেই নয়, যিনি বাস্তব ও রূঢ় কথাটাই শোনালেন। খুব সহমর্মী হয়েই শোনালেন, তিনি দক্ষিণ কলকাতার একজন প্রথিতযশা E.N.T স্পেশালিস্ট। বাবুর রিপোর্ট দেখে বললেন- "যা হয়েছে তা ফেরানো যাবে না". যতটুকু আছে ততটুকু দিয়ে অনেক দূর যাওয়া যাবে। আপনারা ওকে নতুন জীবন দিন. আপনাদের ও অনেক বড়  কিছু দিতে পারবে যদি আপনারা চান। কাল সকালেই আপনাদের প্রথম কাজ হবে ওকে শ্রবণ সহায়ক যন্ত্র দেওয়া, ওকে শোনার আশ্চর্য জগতে নিয়ে আসা।" - আমরা সব মুছে ফেলে দিয়ে নতুন পথের সন্ধানে বেরোলাম। বাবু দু বছর পাঁচ মাস বয়সে প্রথম শব্দ শুনলো।

শুনেছিলাম শল্য চিকিৎসায় কানের পিছনে আধুনিকতম যন্ত্র বসিয়ে ঈশ্বরের দেওয়া দানকে অস্বীকার করা যায় বাবা মা কে সঙ্গে নিয়ে আমরা চলে গেলাম ভেলোরে সেখানকার E.N.T Specialist বললেন - যদি ছয়  মাসের মধ্যে শিশুটি দু -একটি অর্থবহ কথা বলে তাহলে শ্রবণ সহায়ক যন্ত্র স্পিচ থেরাপি তে সাফল্য পাওয়া যাবে না হলে  Cochlear Implant করাতে হবে  আমার ভেতরে জেগে উঠলো এক অন্য "আমি". ভেতর থেকে যেন নির্দেশ এলো পড়তে আমাকে হবেই বাবুকে কথা বলাতেই  হবে আমি চেষ্টা না করলে সত্যি নির্বাক হয়ে যাবে ওর জীবনটা থেমে  যাবে, অনিশ্চিত হয়ে যাবে আমার বাড়ি দক্ষিন চব্বিশ পরগণার  জয়নগরে বাড়ির সবাইকে বুঝিয়ে নতুন সংগ্রামের ব্রত নিয়ে কলকাতায় এলাম

স্পিচ থেরাপি চলছিলই কিন্তু মন ভরছিল না  কোথাও যেন ফাঁকা ফাঁকা লাগছিলো একদিন টিভি তে একটা অনুষ্ঠানের শেষ পাঁচ মিনিট দেখতে পেলাম দেখলাম বাবুর মত  একটা ছোট শিশু কেমন সুন্দর আবৃত্তি  করল অবাক হলামমনে একটা খুশির ছোঁয়াও লাগলো মনে হলো আমি নিশ্চয়ই পারবখুঁজবো, খুঁজবোই সেই জায়গাটাকে  যা আমার ইপ্সিত আমি আলো  চাই, আমি আশা চাই, আমি আনন্দ চাই আমি অন্ধকার চাই না  মা হিসাবে আমি যা চাইতে পারি তাই আমাকে চাইতে হবে এবং পেতে হবে  হঠাৎ  করে পেয়ে গেলাম "অণ্বেষা" কে  বাঘাযতীনে অণ্বেষার কার্যালয় আমরা বাবুকে নিয়ে সেখানে গেলাম সোমাদি আর  সুস্মিতাদি ছিলেন ওনাদের সাথে কথা বললাম, নিজেকে আরো থিতু করলাম বাবুর বাবা একটা কথা বলা বাচ্চাকে দেখতে চাইলেন যে এই প্রতিবন্ধকতাকে জয় করছেসোমাদি আর  সুস্মিতাদির কাছে যখন শুনলাম ওরাও আমার মতই একজন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুর মা, ওঁদের  সন্তানরাও আমাদের মতোই কথা বলে একে  একে  স্নেহা, দেবপ্রিয়া,নীল, আরো অনেক অনেককে দেখলাম যারা আমার বাবুর মতই 

সৌত্রিককে যে মানুষ করে তুলতে পারব, ওকে যে পাঁচ জনের না হোক, দশ জনের মধ্যেও মাথা উঁচু করে দাঁড় করতে পারবো - এই বিশ্বাসে আমি স্নিগ্ধাদি, সোমাদি, সুস্মিতাদি, অনিন্দিতাদি আরো অনেক মায়েদের কাছ থেকে অর্জন করেছি আমি অণ্বেষাতে এসে সেই হারিয়ে যাওয়া, সেই টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়া ছোট্ট ছোট্ট স্বপ্নগুলো আবার বাস্তবায়িত করে তুলতে পাড়ার মতো মানসিক জোর পেয়েছি যে হাসি, যে বিশ্বাস, যে আনন্দ আমার জীবন থেকে মুছে গেছিলো তাকে সম্পূর্ণ না হলেও অনেকটাই নিজের মধ্যে ফিরিয়ে আনতে পেরেছি  নতুন পথে হাটতে শুরু করেছি কত রাস্তা যেতে হবে জানি না রাস্তায় সহজ নয়  অনেক বাঁক, অনেক চড়াই  উতরাই  আমায় পার হতে হবে  তবু যা পেয়েছি, তা অনেকটাই মনে হয়  আজ আমি 'মা" ডাক শুনি টুকরো টুকরো অনেক কথা বাবু বলে  ওর ছোট্ট ছোট্ট চাহিদাগুলি বলে বোঝাতে পারে এই পারাটা আমাকে বিশ্বাস জোগাচ্ছে এবং জোগাবে আশা করি আমি এই কথা মানি যে কোনো বাধাই বাধা হয় না যদি ইচ্ছাশক্তি থাকে, পঙ্গুও গিরি লঙ্ঘন করতে পারে আমিও হয়তো ইচ্ছাশক্তি অণ্বেষার হাত ধরেই ধীরে ধীরে ইংলিশ চ্যানেল পার হয়ে যাব মাসদুর রহমান বৈদ্যের মতই   

সূত্র: অন্বেষণ ২০১১ বার্ষিক জন সচেতনা প্রোগ্রাম স্যুভেনির থেকে সংগৃহীত


ভিডিও: বিশ্ব শ্রবণ দিবস উপলক্ষ্যে সৌত্রিকের শ্রবণ সহায়ক যন্ত্র ব্যবহার করার উপযোগীতা নিয়ে বক্তৃতা 

Tuesday, September 6, 2016

Anwesha: Hearing impairment and its remedy by Ms.Susmita Das


শ্রবণ প্রতিবন্ধকতা ও তার প্রতিকার

শ্রীমতী সুস্মিতা  দাস


“শ্রবণ প্রতিবন্ধী” শব্দটির ব্যবহার আধুনিক। পূর্বে এমনকি এখনও  অনেকে শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের বোবা,কালা বা হাবা -গোবা এই শব্দ দিয়েই চিন্থিত করে।  শ্রবণ প্রতিবন্ধী তারাই যাদের শ্রবণ ক্ষমতা  অতি সামান্য থেকে মাধ্যম বা অতিমাত্রা পর্যন্ত নষ্ট হয়েছে। এই কথা গুলি বোঝার জন্য  একটু বিশদে যাওয়ার  প্রয়োজন। শব্দের প্রাবল্যকে ডেসিবেল ( db ) দ্বারা চিন্থিত  করা হয়। 

ক) যে সকল ব্যক্তির শ্রবণ ক্ষমতা ০ থেকে ২৫ db পর্যন্ত তারা শ্রবণে "সক্ষম"

খ ) যে সকল ব্যক্তির শ্রবণ ক্ষমতা ২৬ থেকে ৪৯ db পর্যন্ত, তারা "স্বল্প (Mild) মাত্রায়" শ্রবণ প্রতিবন্ধী

গ ) যে সকল ব্যক্তির শ্রবণ ক্ষমতা ৫০ থেকে ৬৯ db পর্যন্ত শ্রবণে ক্ষমতা আছে তারা “মধ্যম ( Moderate ) মাত্রায়” শ্রবণ অক্ষম

ঘ ) যে সকল ব্যক্তির শ্রবণ ক্ষমতা ৭০ থেকে ৮৯ db পর্যন্ত তারা “গুরুতর (Severe) মাত্রার” শ্রবণ প্রতিবন্ধী এবং

ঞ) ৯০ db -র  উপর যাদের  শ্রবণ অক্ষমতা আছে তারা  অতি গুরুতর (Profound) মাত্রার” শ্রবণ প্রতিবন্ধী।

এই শ্রবণ প্রতিবন্ধকতার বহু কারণ  থাকতে পারে। যা তিনটি ভাগে ভাগ করা যায় -

১) জন্মপূর্ব কারণ : শিশুর জন্ম পূর্বের যে কারণ গুলি বধিরতার জন্যে দায়ী তা হলো বংশগত বা জিনগত।   রুবেলা  সংক্রমণ, ভাইরাস আক্রমণ, হার্পিস সংক্রমণ, সিনড্রোম সমূহ, পিতা ও মাতার রক্তের (Rh) শ্রেণীর অসামঞ্জস্যতা।

২) জন্মকালীন কারণ: অপরিণত শিশুর জন্ম, জন্ম কালীন শ্বাসকষ্ট, নব জাতকের জন্ডিস

৩) জন্মপরবর্তী কারণ: ভাইরাসের দ্বারা সংক্রমণ, ওষুধের  পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া, কানের ময়লা বা সেরুমেন, মধ্য কর্ণের সমস্যা, শব্দ দূষণ, কানের পুঁজ , কানের বাইরের পদার্থের প্রবেশ। এই  সমস্ত গুলি হলো technological কিছু কথা।   এই  অক্ষমতাকে বুঝতে হলে জানতে হবে এদের সঠিক সমস্যা, যা বাইরে থেকে  বোঝা এক প্রকার অসম্ভব। 

একটি শ্রবণ  প্রতিবন্ধকতাযুক্ত শিশু বা ব্যক্তি যদি বোধগম্য ভাষার দক্ষতা অর্জন করতে না পারে  তবে সমাজে সে হাবা - গোবা বোবা এমনকি কখনো কখনো মানসিক প্রতিবন্ধী বলেও বিবেচিত হয়। শ্রবণ অক্ষমতাযুক্ত শিশু বা ব্যক্তির সমস্যাগুলি বিভিন্ন ধরণের।  ভারতবর্ষের নিরিখে যদি এই সমস্যাগুলি বিবেচনা করি তাহলে প্রথমেই আসে আর্থ -সামাজিক ব্যবস্থা, তারপর শিক্ষা এবং  সর্বোপরি সঠিক পুর্নবাসন। আমরা মনে করি একটি শিশুর সার্বিক  বৃদ্বির জন্য তার পরিবারের ভূমিকা অসীম। যে পরিবারে তার মা, বাবা, ভাই বোন, আত্মীয় স্বজন  সঠিক ভাবে শিশুটিকে সাহায্য করে সেই শিশুই  ভবিষতে এক দক্ষ নাগরিক হিসেবে বেড়ে ওঠে। আর এটাও পরীক্ষিত যে মানুষের কথা বলার দক্ষতা  জন্মগত নয় , জন্মের পরে স্বাভাবিক শ্রবণ সাহায্যে পরিবেশে ব্যবহুত ভাষা শুনতে শুনতে সে কথ্য ভাষা আয়ত্ত করে। কিন্ত একটি পরিবারের  প্রত্যেকেই যদি রুটি রোজগারের জন্যে ব্যস্ত থাকতে হয়, তবে শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিশুটির প্রয়োজনীয় সহায়তা হয়তো সঠিক ভাবে দেওয়া সম্ভব হয় নাআবার  আবার অপর পক্ষে ওই পরিবারের আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে শ্রবণ সহায়ক যন্ত্র কিনে শিশুটিকে স্বাভাবিক কথা শোনানোও অসম্ভব হয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে শিশুটির বিকাশে এই আর্থিক কারণই  হলো প্রধান সমস্যা।

একটি শিশুর যদি ভাষা শিক্ষা  বা ভাষার দক্ষতা সঠিক বয়সে সঠিক মাত্রায় না হয় তবে তার যোগাযোগ এবং শিক্ষায় নানান সমস্যা দেখা দেয়। যে ভারতবর্ষ বিশ্বের অনেক দেশকে সভ্যতার ও সংস্কৃতির আলো দেখিয়েছে  সেই ভারতবর্ষের  শিক্ষার ইতিহাসে বধির শিক্ষার নির্দর্শন কিনতু বিশেষ খুঁজে পাওয়া যায় না। এর পরের সমস্যা আরো গুরুতর, তা হলো সরকারি বা বেসরকারি ক্ষেত্রে এই শ্রবণ অক্ষম শিশুদের সঠিক পুনর্বাসনের ব্যবস্থার অপ্রতুলতা। ভারতবর্ষে প্রতিবন্ধকতাযুক্ত  মানুষের জন্য প্রণীত আইন দ্বারা এই শ্রবণ অক্ষম শিশুদের কিছু ক্ষমতা বা অধিকারকে কার্যকরী করে তোলা হয়েছে তবে তা শুধু খাতায় কলমেই থেকে গেছে বিশেষ বাস্তবায়িত হচ্ছে না।

এই সকল সমস্যা যুক্ত শ্রবণ অক্ষম শিশু বা ব্যক্তি কেও কিন্তু সঠিক প্রথাগত কিছু নিয়মের মধ্যে দিয়ে নিয়ে গিয়ে সাফল্যের পথে এগিয়ে দেওয়া যায়  তার বেশ কিছু নির্দর্শন আমরা আমাদের সমাজকে এখন দেখাতে পারছি। যদি একটি শ্রবণ অক্ষম শিশুর  খুব অল্প বয়সে শ্রবণ অক্ষমতার মাত্রা নিরূপণ করা যায় এবং সঠিক শ্রবণ সহায়ক যন্ত্র (Hearing Aid) ব্যবহার করান যায় তবে প্রথম প্রতিকারমূলক পদক্ষেপটি কার্যকরী হবে।  এরপর শুরু হবে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় শিশুটিকে কথা শোনানো অর্থাৎ মা, বাবা, আত্মীয় স্বজন যেভাবে স্বাভাবিক কথোপকথন চালান একটু বেশি মাত্রায় শিশুটির সাথেও তাই করতে হবে।  এই হলো দ্বিতীয় প্রতিকারমূলক পদক্ষেপ।  এর সাথে চলতে থাকবে সামাজিকীকরণ। প্রতিবেশী শিশু ও সমবয়সী শিশু, আত্মীয় স্বজনের সাথে স্বাভাবিক ভাবে  মেলামেশা করানো ও খেলাধুলায় অংশ গ্রহণ করানো। প্রাক প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে তাকে নিয়ে আসতে  হবে। এই  নিয়ম গুলির মধ্যে সবচেয়ে জরুরি হলো সঠিক সময়ে শ্রবণ অক্ষমতা নিরূপণ এবং সঠিক শ্রবণ সহায়ক যন্ত্রের ব্যবহার। শ্রবণ সহায়ক যন্ত্র হলো একটি শব্দ বিবর্তক যন্ত্র। যা মূলত এই শ্রবণ অক্ষম শিশুদের শ্রবণে সহায়তা  করে।  একথা পরীক্ষিত ভাবে প্রমাণিত যে বধির শিশুকে যদি যথাসময়ে এবং যথোপযুক্ত শ্রবণ সহায়ক যন্ত্র ব্যবহার করানো এবং তার ভাষা বিকাশের উপযোগী সহায়তা  দেওয়া হয় তাহলে তা শ্রবণে অসুবিধাগ্রস্ত শিশুর জীবন সাধারণ শ্রবণক্ষম শিশুর মতোই হয়ে উঠবে।

কিন্তু দুঃখের বিষয় এর পাশে পাশেই পূর্বে আলোচিত আর্থ  সামাজিক কারণে বহু শ্রবণ অক্ষম শিশুর পরিবার এই শ্রবণ সহায়ক যন্ত্রের সাহায্য নিতে পারে না , সে ক্ষেত্রে শিশুটির ভাষার বিকাশ না হওয়ায় সে পিছিয়ে পড়ে।  আর সকলের মত করে বড়ো হয়ে উঠতে  পারে না।  জীবনের প্রতি ক্ষেত্রে সে বিদ্রুপ অরে শোষণের শিকার হতে পারে। ফলে মানসিক ভাবেও সে পিছিয়ে পড়ে। যদিও এই শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিশুরা একটি  বিশেষ পদ্ধতিতে অর্থাৎ সাইন ল্যাংগুয়েজের মাধ্যমে ভাষা শিক্ষা ও নিজেদের ভাব প্রকাশ করতে পারে। আমরা এমন সমাজে বাস করি যেখানে আমাদের মতো অপরজন না হলেই তাকে ত্যাগ করার মানসিকতা চলে আসে। তাই ওই বিশেষ পদ্ধতিকে সমাজ কতখানি অগ্রাধিকার দেবে ও সেই শিশুকে সমাজ কতখানি আপন করে নেবে সেই বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ থেকেই যায়। তাই শ্রবণ অক্ষম শিশুদের শ্রবণ সহায়ক যন্ত্রের ব্যবহার করানোই সর্বক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য। সব শেষে এর সাথে সাথেই আমরা আশা করি যে উন্নয়্নশীল সমাজ ব্যবস্থার মধ্যে এই  বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুটি বড়ো হচ্ছে সেই স্তরের, প্রতিটি মানুষের পূর্ণ সহযোগিতা শিশুদের সার্বিক অগ্রগতির দিকেই এগিয়ে নিয়ে যাবে।

ধন্যবাদ

এমনই  একটি বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুর মা -    


সূত্র : অন্বেষণ ২০০৮ বার্ষিক জন সচেতনা  প্রোগ্রাম স্যুভেনির থেকে সঙ্কলিত
               

Monday, September 5, 2016

Anwesha: Aamar Katha by Anurupa Ghosh

আমার কথা
অনুরূপা  ঘোষ
আমার ছোটবেলার কথা আমি  বাবা ও মার কাছে শুনেছি যে আমার যখন আড়াই বছর বয়স তখনও আমি কথা বলতে পারতাম না, তখন ডাক্তারের কাছে বাবা ও মা যান এবং বেরা টেস্ট করে জানতে পারেন যে আমি কানে শুনতে পাই না, আমি একজন শ্রবণ  প্রতিবন্ধী।  তখন আমার মা ও বাবা খুব হতাশ হয়ে পড়েছিলেন যে তাদের মেয়ে কথা বলতে পারবে না, জীবনে পড়াশুনো করতে পারবে না তবে আমার মা ও বাবা ভেঙে না পড়ে লড়াই শুরু করেন। প্রথমে স্পেশাল স্কুলে এক বছর পড়েছি, তারপর সাধারণ স্কুলে পড়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছি এবং  যাদবপুর  বিশ্ব বিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি নিয়ে স্নাতক হয়েছি। এখন আমি কেন্দ্রীয় সরকারী কর্মচারী। রাজ্য  বিমা নিগমে  (Employees State Insurance Corporation) চাকরি করি।

আমি যখন স্কুলে পড়ি তখন ক্লাসে সব পড়া বুঝতে পারতাম না ও খুব অসুবিধা হতো পড়া বুঝতে। এই ভাবে বেশির ভাগ সময় পড়ায় পিছিয়ে যেতাম। শিক্ষক ,শিক্ষিকা ও সহপাঠীদের কাছ থেকে  সাহায্য চাইতাম পড়া বোঝানোর জন্য। মাঝে মাঝে সময় থাকলে থাকলে তারা পড়া বুঝিয়ে দিত।  তবুও কিছু কিছু পড়া বুঝতে না পেরে পিছিয়ে পড়তাম, এই ভাবে আমার মনের মতো খুব  ভালো রেজাল্ট করতে পারতাম না।  তারপর  যখন কলেজে পড়তাম তখন আরো অসুবিধা হতো পড়া বুঝতে কারণ ইংরেজীতে পড়ানো হতো।  কিন্তু খুব চেষ্টা করতাম পড়া বোঝার তবু সেই রকম সাফল্য হতো না।  যখন বনধুরা ও আত্মীয়-স্বজনেরা গল্প করে একসাথে আড্ডা মারে তখন আমি  অনেক কথা বুঝতে পারি না , নিজেকে একলা একলা অনুভব করি ও ভালো লাগে না। তারপর যারা বাংলায় বলতে পারে না তাদের কথা বুঝতে পারি না।  ছোটবেলায় যখন আমি কথা বুঝতে পারতাম না  ও লোকেরা আমার কথা বুঝতে পারতো না তখন আমি একা  হয়ে যেতাম ও খুব দুঃখ পেতাম। এর ফলে লোকের সাথে মিশতে চাইলেও মিশতে পারতাম না।  ফোনে সব সময় ভালো করে বুঝতে পারি না। 

এই অবস্থায় আমি যখন অন্বেষায় এলাম, দেখলাম যে আমার মত অনেক শ্রবণ সমস্যাযুক্ত  ছেলেমেয়েরা অনেক কষ্ট করে পড়াশুনো করে বড়ো হয়েছে। তারপর আমরা কিছু বনধুরা এক জায়গায় হই ,  আলোচনা করে বুঝতে পারলাম আমাদের যাদের শোনার অসুবিধা আছে আমরা "সিঙ্গল ল্যাংগুয়েজ (Single Language)" নিয়ে advocacy করলে হয়তো এই অসুবিধাটা আমাদের মতো ছোট বনধু , ভাই বোনেদের হবে না। এই ভাবে আমরা   “BONDHU Group “ তৈরী করি। আমরা ৯ই নভেম্বর ২০১৩ তে বিকাশ ভবনে শিক্ষা বিষয়ক সমস্ত আধিকারিকদের সাথে আলোচনা করি। 

তারা আমাদের তথ্যের উপর ভিত্তি করে সিঙ্গল  ল্যাঙ্গুয়েজে  স্কুলগুলিতে চালু করে।  এই রকম আরও কাজ “BONDHU Group” থেকে আশা করি। যদিও আমাদের লড়াইয়ের শেষ নেই, এখনও  লড়াই  চালিয়ে যেতে হবে,তবে আমি আমার জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি  যে প্রতিবন্ধকতা মানুষকে আরো আত্ম বিশ্বাসী ও স্বাবলম্বী হওয়ার জেদ বাড়িয়ে দেয়।   
          
সূত্র : অন্বেষণ ২০১৩ বার্ষিক জন সচেতনা  প্রোগ্রাম স্যুভেনির থেকে সঙ্কলিত


Thursday, September 1, 2016

Anwesha: Aamar Katha by Kaushani Ghatak

আমার কথা

কৌশানী  ঘটক



আমি ছোটবেলায় সার্কে পড়তাম।  পরে আমি কমলা চ্যাটার্জ্জী স্কুলে প্রেপ ১ এ  ভর্তি  হয়েছিলাম।  একটা সময় আমি দুটো স্কুলে একসাথে পড়তাম। সার্কে বিনোতাদিদির কাছে পড়েছি।  সেই সময় ভালো বুঝতাম না। আমি ছোটবেলায় ভালোভাবে কথা বলতে পারতাম না বা বুঝতে পারতাম না। স্কুলে পড়া বুঝতে ও কথা বুঝতে  অসুবিধা হতো।  আমিও ঠিক ভাবে টিচার এর সাথে কথা বলতে পারতাম না।  ধীরে ধীরে আমার বোঝার জায়গা বাড়তে  লাগল এবং এবং বনধুরা আমাকে সাহায্য করতো। তবে ইতিহাস, ভূগোল, বিজ্ঞান  ও অঙ্ক  নানা ভাষা বা শব্দ ঠিক মতন বুঝতে পারতাম না। সেই  সময় বাবা মা আস্তে আস্তে পড়াগুলো বুঝিয়ে দিতেন।

পরে অন্বেষাতে আসার পর কিছু কিছু বিষয়ে বোঝার জায়গা বাড়তে লাগল।  এই ভাবে আমি এগোতে থাকলাম এবং মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক পরীক্ষা পাশ করে আজ আমি বিহারীলাল কলেজে হিউমান ডেভেলপমেন্টে মাস্টার্স  বর্ষে  পড়ছি।  কয়েকজন কলেজের বনধু পড়াশুনোর ব্যাপারে আমাকে সাহায্য করে। এখন আমি একা কলেজে যাতায়াত করতে পারি। ফলে সাহস আর  আত্মবিশ্বাস বেড়েছে।  আমার আত্মবিশ্বাস বাড়ার কারণ হলো যে অন্বেষাতে মিঠি দিদি, স্নেহা দিদি  এদের দেখে এবং এখানে এসে আমি ধীরে ধরে এগিয়ে যাচ্ছি।

আরেকটা বিশেষ কথা অন্বেষাতে প্রতি  বছর অ্যানুয়াল প্রোগ্রাম এ আমরা সবাই মাইল যে নাটক ও নাচ  করি, তা আমার ভীষণ ভালো লাগে।  অন্বেষায় আমরা কয়েকজন "বনধু"  নাম একটা দল  তৈরী করেছি। আজ আমি যে অবস্থায় এসেছি তার জন্যে বাবা মা অনেক পরিশ্রম করেছে। আমি চেষ্টা করলাম আমার ছোটবেলার কথা গুলো বলতে।




Anwesha: Aamar Katha by Antik Kumar Dewanji


আমার কথা

আমার নাম অন্তিক  কুমার  দেওয়ানজী।  আমাকে দেখতে  আর দশ জন মানুষের মতোই। তবে তাদের সাথে আমার একটু পাৰ্থক্য আছে. সেটা হলো শোনার  অসুবিধা।  আমি মার্ কাছে শুনেছি  আমি জন্ম  থেকেই  শুনতে পাই  না। আর  এইটুকু  অসুবিধার জন্য আমাদের জীবনে নেমে আসে বিশাল  বাধা।  কোন  কিছু  করতে গেলে সবাই বলতো তুমি শুনতে  পাও না, তুমি  পারবে না।  কিন্তু এই কথাটা এখন আর সত্যি নয়।  কারণ আমার মা বাবা অক্লান্ত পরিশ্রম করে আমাকে আর দশ জন মানুষের মতো তৈরি করার  চেষ্টা করেছেন এবং  অনেকটা  সফল  হয়েছেন। আমি সেন্ট লরেন্স  থেকে মাধ্যমিক পাশ  করেছি।  এখন আমি প্রফুল্ল  চন্দ্র  রায়  পলিটেকনিকের  তৃতীয়  বর্ষের ছাত্র।

সেন্ট লরেন্সে  আমি  প্রথম  শ্রেণী  থেকে পড়ছি।  আমার বন্ধুরা ভীষণ ভালো ছিল। তারা আমাকে ক্লাসের পড়াশুনো নানা কাজে খুব সাহায্য করতো। কোন  কিছু বুঝতে না পারলে আমাকে বুঝিয়ে  দিতো  এবং আমার খাতায় লিখে দিতো।  মিস স্যারেরা আমাকে সব সময় সামনে বসাতেন যাতে আমার পড়া শুনতে  বা বুঝতে কোনো অসুবিধা না হয়। আমাদের স্কুলে প্রচুর অনুষ্ঠান ( যেমন রবীন্দ্র জয়ন্তী, শিক্ষক দিবস, শিশু দিবস, বড়দিন ইত্যাদি) হতো  এবং প্রত্যেক  অনুষ্ঠানে আমাকে যোগদান  করতে হতো। আমার বন্ধুরা আমাকে ছাড়া কোনো অনুষ্ঠান করতো না।  আমার বন্ধুরা আমাকে ভীষণ   ভালোবাসতো , এখনো ভালোবাসে।  ফাদার বুশে  এখন আর  আমাদের মধ্যে নেই।  তিনি আমাকে ভীষণ  ভালোবাসতেন।  মা কে  দেখলেই তিনি বলতেন, " তুমি ছেলেকে বড্ড বেশি পড়াও।" এছাড়া ফাদার ওয়েভেল সব সময় আমাকে জিজ্ঞাসা করতেন আমার পড়া  কেমন হচ্ছে  ? আমি কোনোদিন কোনো অবহেলা কারও  থেকে পাই নি। প্রত্যেকের সাহায্যে ভালোবাসার মধ্যে আমি  বড় হয়েছি। আমি এখন কলেজের  বনধুদের  সাথে  বিভিন্ন  জায়গায় যাই।  তারা আমাকে  সমস্ত কাজে সাহায্য করে ।

তাই আমি কখনও  বুঝি নি যে আমার কোনো বিশেষ  অসুবিধা  আছে।  আমার যে শোনার অসুবিধা আছে  সেটা ভাববার  সুযোগ আমাকে দেয়নি।  সব সময় আমাকে তাদের সঙ্গে সঙ্গে রেখেছে।  আবার কলেজেও একই ভাবে আমি সকলের সাহায্য ও ও ভালোবাসা পেয়েছি।  তাই শোনার অসুবিধা কখনও আমার বেড়ে ওঠার পক্ষে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি।  তাই আমি আমার ছোট ভাই বোনদের জন্য বলবো চেষ্টা  করলে আমরা নিশ্চয়ই  সফল হবো।

ধন্যবাদ

 সূত্র : অন্বেষা ২০০৮ বার্ষিক জন সচেতনা  প্রোগ্রাম স্যুভেনির থেকে সঙ্কলিত