Thursday, May 17, 2018

My daughter Iftisha ( আমার মেয়ে ইফ্তিসা )

আমার মেয়ে ইফতিসা
নাসিমা বিবি

মানুষ জীবনে এমন কিছু কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন করে, হয়তো সেই অভিজ্ঞতা মানুষকে অনেক কিছু জানতে, বুঝতে ও অনুভব করতে শেখায়। ঠিক তেমনই আমার জীবনে সবচেয়ে বড় অভিজ্ঞতা আমার শিশুর বধিরতা, যা আমাদের পরিবারে কোনো সদস্য এবং আমারও ওই বিষয়ে কিছুই জানা ছিল না।

আমার শিশু প্রাকৃতিক নিয়মে অন্য শিশুদের মত কথা বলতে শিখছিল না। বাড়ির সবাই বলতেন ও হয়তো একটু দেরিতেই কথা বলবে। কিন্তু সময় যেতে থাকলো, আমার শিশু কথা বলতে পারতো না।  তাই আমার ছোট দুই বছরের শিশুকে নিয়ে এস.এস.কে.এম হসপিটালে একজন ই.এন.টি ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাই। তিনি সব কিছু শোনার পর ওর কানের বেরা টেস্ট করান। টেস্ট করানোর পরে জানতে পারি ও কানে শুনতে পায় না। এই কথাটি শোনার পর আমার সব কিছুই শুন্য লাগতে থাকে। আমার মন একেবারে ভেঙে যায়, আমার সাথে সাথে আমার পরিবারে হতাশার ছায়া নেমে আসে। এস.এস.কে.এম হসপিটাল থেকে ডাক্তার আমাকে NIHH নিয়ে যাওয়ার কথা বললেন। সেখানে শোনার অসুবিধা আছে এমন শিশুদের নিয়ে কাজ করা হয়। আমি আমার শিশুকে নিয়ে  NIHH এ যাওয়া শুরু করলাম। সেখানে গিয়ে আমি অন্বেষার কথা জানতে পারলাম - যেটি বধির শিশুর মা বাবাদের একটি প্রতিষ্ঠান।

আমি অন্বেষায় গেলাম। সেই দিনটাকে আমার জীবনের মূল্যবান দিন হিসাবে আমি মনে রেখেছি।  সেখানে মায়েদের সাথে কথা বলে, আমার মনে একটু শান্তি ফিরে এসেছিল। দিদিদের কথা শুনে আমার শূন্য জায়গাটা একটু হলেও ভরতে পেরেছিলাম। আজ আমি অন্বেষার একজন মা, যে অন্বেষার পদ্ধতিতে কাজ করে আমার শিশুর মুখে মা ডাক শুনতে পেয়েছি  এবং কানের মেশিন দ্বারা আমার শিশুর শোনার অভ্যাস তৈরী করতে পেরেছি। এখানে মায়েদের একটি বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, সেই প্রশিক্ষণ নিয়ে আমি একজন সঠিক মা হয়ে ওঠার পথ খুঁজে পেয়েছি। আগামী দিনে আমি অন্বেষার পাশে থেকে এক নতুন দিগন্ত রচনা করতে চাই এবং অন্বেষাকে আরও সমৃদ্ধ করতে চাই।

সূত্র :   অন্বেষণ ২০১৫ বার্ষিক জন সচেতনা প্রোগ্রাম স্যুভেনির থেকে সঙ্কলিত



No comments:

Post a Comment