আমার কথা
আমার
নাম অন্তিক কুমার দেওয়ানজী। আমাকে দেখতে আর দশ জন
মানুষের মতোই।
তবে তাদের সাথে
আমার একটু পাৰ্থক্য
আছে. সেটা হলো
শোনার অসুবিধা। আমি মার্ কাছে
শুনেছি আমি জন্ম
থেকেই শুনতে পাই
না। আর এইটুকু অসুবিধার জন্য
আমাদের জীবনে নেমে
আসে বিশাল বাধা। কোন কিছু করতে গেলে
সবাই বলতো তুমি
শুনতে পাও না,
তুমি পারবে না।
কিন্তু এই কথাটা
এখন আর সত্যি
নয়। কারণ আমার
মা বাবা অক্লান্ত পরিশ্রম করে
আমাকে আর দশ
জন মানুষের মতো
তৈরি করার চেষ্টা করেছেন এবং
অনেকটা সফল হয়েছেন। আমি
সেন্ট লরেন্স থেকে মাধ্যমিক পাশ
করেছি। এখন আমি
প্রফুল্ল চন্দ্র রায় পলিটেকনিকের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।
সেন্ট লরেন্সে আমি প্রথম শ্রেণী থেকে পড়ছি।
আমার বন্ধুরা ভীষণ
ভালো ছিল। তারা
আমাকে ক্লাসের পড়াশুনো
ও নানা কাজে
খুব সাহায্য করতো।
কোন কিছু বুঝতে
না পারলে আমাকে
বুঝিয়ে দিতো এবং আমার খাতায়
লিখে দিতো। মিস ও স্যারেরা
আমাকে সব সময়
সামনে বসাতেন যাতে
আমার পড়া শুনতে
বা বুঝতে কোনো
অসুবিধা না
হয়। আমাদের স্কুলে
প্রচুর অনুষ্ঠান ( যেমন
রবীন্দ্র জয়ন্তী,
শিক্ষক দিবস, শিশু
দিবস, বড়দিন ইত্যাদি)
হতো এবং প্রত্যেক
অনুষ্ঠানে আমাকে
যোগদান করতে হতো।
আমার বন্ধুরা আমাকে
ছাড়া কোনো অনুষ্ঠান
করতো না। আমার বন্ধুরা আমাকে
ভীষণ ভালোবাসতো
, এখনো ভালোবাসে। ফাদার বুশে এখন আর আমাদের মধ্যে নেই।
তিনি আমাকে ভীষণ
ভালোবাসতেন। মা কে দেখলেই তিনি বলতেন,
" তুমি ছেলেকে বড্ড
বেশি পড়াও।" এছাড়া ফাদার ওয়েভেল
সব সময় আমাকে
জিজ্ঞাসা করতেন
আমার পড়া কেমন হচ্ছে ? আমি কোনোদিন কোনো
অবহেলা কারও থেকে পাই নি।
প্রত্যেকের সাহায্যে
ও ভালোবাসার মধ্যে
আমি বড় হয়েছি।
আমি এখন কলেজের
বনধুদের সাথে বিভিন্ন জায়গায় যাই। তারা আমাকে সমস্ত কাজে সাহায্য করে ।
তাই আমি কখনও বুঝি নি যে আমার কোনো বিশেষ অসুবিধা
আছে। আমার যে শোনার অসুবিধা আছে সেটা ভাববার
সুযোগ আমাকে দেয়নি। সব সময় আমাকে তাদের
সঙ্গে সঙ্গে রেখেছে। আবার কলেজেও একই ভাবে
আমি সকলের সাহায্য ও ও ভালোবাসা পেয়েছি। তাই
শোনার অসুবিধা কখনও আমার বেড়ে ওঠার পক্ষে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। তাই আমি আমার ছোট ভাই বোনদের জন্য বলবো চেষ্টা করলে আমরা নিশ্চয়ই সফল হবো।
ধন্যবাদ
সূত্র : অন্বেষা
২০০৮ বার্ষিক জন সচেতনা প্রোগ্রাম স্যুভেনির থেকে সঙ্কলিত
No comments:
Post a Comment